পাহাড়ের অর্কিড রক্ষায় সাইথোয়াই মারমার উদ্যোগ

খাগড়াছড়িতে বিলুপ্ত ও বুনো জাতের অর্কিডের সংরক্ষণগার গড়ে তুলেছেন অর্কিডপ্রেমী তরুণ সাইথোয়াই মারমা। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড় থেকে বিপন্ন প্রজাতির অকির্ডের জাত সংগ্রহ করেছেন তিনি। তবে কোনো বাণিজ্যিক উদ্দেশে নয়, পাহাড়ের হারিয়ে যাওয়া অকির্ড রক্ষায় এমন উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

প্রায় পাঁচ বছর ধরে সংগ্রহ করা বিপন্ন ও দেশীয় প্রজাতির অর্কিড দিয়ে সংরক্ষণশালা গড়ে তুলেছেন তিনি।

সরেজমিনে খাগড়াছড়ি জেলা শহরের রাজ্যমনি পাড়ার সাইথোয়াইয়ের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তার সংরক্ষণশালায় ডেন্ড্রোবিয়াম লিন্ডলে, ডেন্ড্রোবিয়াম পিয়েরাড্ডি, সিলোজিনি, এনসেপ, ফক্সটেইল, ট্রান্সপারেন্স, একেম্পে রিগিদা, এরিয়া টেমেনটোসাসহ প্রায় ৫৫ প্রজাতির বিপন্ন অর্কিড রয়েছে।


কোনো ধরণের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই পাহাড়ের বিভিন্ন বন ঘুরে তিনি এসব বিরল জাতের অর্কিড সংগ্রহ করেছেন। ফুলের টবের পরিবর্তে বাহারী রঙের অর্কিড শোভা পাচ্ছে তেঁতুল, আম, জারুল, সোনালু, কাঁঠাল গাছে। বন থেকে সংগ্রহ করা বেশিরভাগ অর্কিডকে প্রাকৃতিকভাবে সৃজন করা হয়েছে। দুষ্প্রাপ্য ও বিপন্ন অর্কিড রক্ষায় গড়ে তুলেছেন ‘হিল অর্কিড সোসাইটি’।  

অর্কিড সংরক্ষণের উদ্যোক্ততা সাইথোয়াই বলেন, এক সময় পাহাড়ের বড় বড় গাছে অর্কিড দেখা গেলেও তা আজ বিলুপ্ত। আমাদের দেশীয় অর্কিড যাতে হারিয়ে যেতে না পারে সেজন্য পাঁচ বছর ধরে পাহাড়ের বিভিন্ন থেকে নানা জাতের অর্কিড সংগ্রহ করছি। অর্কিডগুলোকে বন্য বা প্রাকৃতিক পরিবেশ দেওয়ার জন্য বিভিন্ন গাছে সংগ্রহ করা অর্কিড সৃজন করা হয়েছে।


তিনি আরো বলেন, একটা সময় বাংলাদেশে প্রায় ২০০ প্রজাতির মতো নেটিভ অর্কিড ছিল। যে অর্কিডের বাল্ব দিয়ে আদিবাসী বৈদ্যরা বিভিন্ন দুরারোগ্যর ওষুধ তৈরি করতো। বর্তমানে নির্বিচারে বন ধ্বংস ও অর্কিড পাচারের কারণে এসব অর্কিড আজ বিলুপ্তির পথে।

অর্কিড দেখতে আসা প্রলয় বাপ্পী ও আক্তার  হোসেন  জানান, আমাদের দেশে ১৪০-১৫০ প্রজাতির বন্য  অর্কিড পাওয়া যায়। দুষ্প্রাপ্য অর্কিড রক্ষায় এটি খুবই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এমন উদ্যোগের কারণে পাহাড়ের হারিয়ে যাওয়া বুনো অর্কিড রক্ষায় অনেকে উৎসাহিত হবেন।


প্ল্যানটেশন ফর ন্যাচারের প্রতিষ্ঠাতা সবুজ চাকমা বলেন, রঙে ও বৈচিত্র্যে আর্কষণীয় অর্কিড। ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অর্কিড ফুল ফোটে। পরাশ্রয়ী শ্রেণির এসব অর্কিড সাধারণত বনের বট বা জারুলসহ বিভিন্ন বড় বড় বৃক্ষে দেখা যেত। পাহাড়ের প্রাকৃতিক বন ধ্বংসের কারণে ক্রমশ বিলুপ্ত হচ্ছে এসব অর্কিড। 

তবে অর্কিড রক্ষায় সাইথোয়াই মারমার উদ্যোগ অনন্য বলেও প্রশংসা করেন তিনি। 

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //